" বাঙাল বাঙাল, পুঁটি মাছের কাঙাল" - পূর্ববঙ্গের 'বাঙাল'কে উদ্দিষ্ট করে পশ্চিমবঙ্গে রঙ্গব্যঙ্গ ও পরিহাসের সীমা নেই। সেই বাঙালের একজন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। 'বাঙাল' পরিচয়ের এক কবি কী করে পশ্চিমবঙ্গে 'কল্কে' পেলেন, তুলকালাম কাণ্ড ঘটালেন তা খানিকটা ভাববার বিষয় - বিশেষত উপনিবেশিত ভারতীয় উপমহাদেশে কলকাতা যখন রাজনীতি, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির হর্তাকর্তা। ধরে নিলাম, পশ্চিমী কাব্য-সাহিত্যের ভাববিস্তার দ্বারা সাহিত্যিক ইতিহাসের পরম্পরা ভেঙে মাইকেল ধাঁধিয়ে তুলেছিলেন সে কালের কলকাত্তাই বুদ্ধিজীবিতাকে। কিন্তু স্বদেশে, অর্থাৎ 'পুঁটি মাছের কাঙাল' এই বাঙালমুলুকে কেমন ছিল তাঁর পরিগ্রহণ? সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে কী করে তিনি প্রবিষ্ট হয়েছিলেন পূর্ববাংলার মনোজনিবাসে?
বলা ভালো, 'পাঠ' প্রসঙ্গটিকে আমরা কমপক্ষে দুটি স্তর থেকে বুঝতে চাইছি। প্রথম স্তর, একজন পাঠক এবং মধুসূদনের সাহিত্যের মধ্যকার সাধারণ সংযুক্তি। যার হদিস মিলবে বিভিন্ন স্মৃতিচারণমূলক লেখায়। দ্বিতীয় স্তর, মধুসূদনের লেখার সঙ্গে পাঠকের বুদ্ধিবৃত্তিক ও জ্ঞানতাত্ত্বিক সম্পৃক্ততাসমেত বিশ্লেষণী অংশগ্রহণ প্রচুরসংখ্যক বিদ্যায়তিক ও অবিদ্যায়তনিক সমালোচনা, গবেষণা, প্রবন্ধে এর সাক্ষ্য বিদ্যমান। অন্যদিকে 'পরিগ্রহণ' বলতে বুঝতে চাইছি মধুসূদনের সাহিত্য থেকে কবি-লেখক কর্তৃক গৃহীত সংবেদনা, ভাব, ভাষা ও প্রেরণা ইত্যাদি। এর দৃষ্টান্ত মিলবে মধুসূদনের সমকালীন ও মধুসূদন-পরবর্তী লেখকদের রচনাবলি ও আত্মস্বীকৃতিতে। সামগ্রিকভাবে মধুসূদন অধ্যয়নের একটি সরল ইতিবৃত্ত খুঁজে দেখার চেষ্টা থাকবে এ প্রবন্ধে। আমরা আরেকটি পরিপূরক প্রশ্নের কথাও ভাবতে চাই: তা হলো, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের সমান্তরালে বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক সমাবেশে মধুসূদনের অবস্থানটি আদতে কেমন? এসব প্রশ্নের জবাব হয়তো আমরা খুঁজবো; কিন্তু তার আগে আমরা প্রবেশ করতে চাই 'বাঙালদেশে'র মনীষীদের স্মৃতিপ্রবাহে। দেখতে চাই, মধুসূদনকে তাঁরা কেমনভাবে পেয়েছিলেন?
বাংলাদেশের মধুসূদন: পাঠ ও পরিগ্রহণের রূপরেখা প্রবন্ধটি সাতটি খন্ডে ভাগ করা হয়েছে:-
• মনের মন্দিরে: স্মৃতির পরম্পরায়
• বঙ্গজনের চোখে অথবা স্মৃতির লোকায়ত পাঠ
• পঞ্চ মুখে পঞ্চমুখ : বিদ্যায়তনের সীমানায়
• অরণ্যে কুসুম ফোটে: কবি লেখকদের করতলে
• তিষ্ঠ ক্ষণকাল: সাম্প্রতিক মধুসূদন
• রেখো, মা দাসে রে মনে: বাংলাদেশ, জাতীয়তাবাদ ও মধুসূদন
• দাঁড়াও পথিকবর: প্রস্তাব
বি:দ্রা: সম্পূর্ণ প্রবন্ধটি পড়তে আমাদের সাথে থাকেন। ধারাবাহিকভাবে প্রচারিত হবে আমাদের ওয়েবসাইটে